Written and Unwritten Constitution
Differences between Written and Unwritten Constitution? Benifits of Flexible Constitution? WBCHSE class eleven Political Science notes in Bengali. Chapter- Constitution. Question- What Are The Differences Between Written and Unwritten Constitution? Rastrabigyan Prashna Uttar.
একাদশ শ্রেণিরাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্নোত্তরঅধ্যায়- সংবিধান
প্রশ্ন- লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের প্রধান পার্থক্যগুলি আলােচনা করাে। সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের গুণগুলি উল্লেখ করাে। 4+4 (উঃমাঃ 2018)
উত্তর- বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সংবিধানের শ্রেণীবিভাগ করেছেন। সংবিধানের রচনা-পদ্ধতি অনুসারে সংবিধানকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে- i) লিখিত সংবিধান এবং ii) অলিখিত সংবিধান। নামকরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, লিখিত সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার শাসনতান্ত্রিক নীতিসমূহ কোনো দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে কিন্তু অলিখিত সংবিধানে সেগুলি লিপিবদ্ধ থাকে না। যাইহোক, নীচে লিখিত এবং অলিখিত সংবিধানের পার্থক্য গুলি তুলে ধরা হল।
লিখিত এবং অলিখিত সংবিধানের পার্থক্য
i) উৎপত্তিগত পার্থক্য- লিখিত সংবিধান সাধারণভাবে কোনো সংবিধান সভা দ্বারা প্রণীত হয়। যেমন, ভারতের সংবিধান রচনা করেছিল গণপরিষদ। অপরপক্ষে, অলিখিত সংবিধান দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত প্রথা, রীতিনীতি, বিচারালয়ের রায় প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। যেমন, ইল্যান্ডের সংবিধান।
ii) প্রকৃতিগত পার্থক্য- লিখিত সংবিধানের নিয়মনীতিগুলি বিধিবদ্ধ অবস্থায় থাকে কিন্তু অলিখিত সংবিধান প্রকৃতিগতভাবেই অলিখিত।
iii) মর্যাদাগত পার্থক্য- অলিখিত সংবিধানের চেয়ে লিখিত সংবিধান অধিক মর্যাদার অধিকারী।
iv) সংশোধনের পদ্ধতিগত পার্থক্য- লিখিত সংবিধান সাধারণত দুষ্পরিবর্তনীয় হয়। অর্থাৎ, সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে লিখিত সংবিধানকে সংশোধন করা যায় না। তবে এর কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন, নিউজিল্যান্ডের সংবিধান লিখিত হওয়া স্বত্বেও তা সুপরিবর্তনীয়। অপরপক্ষে, অলিখিত সংবিধান সবসময় সুপরিবর্তনীয় হয়।
v) বিচারালয়ের ভূমিকাগত পার্থক্য- লিখিত সংবিধানের ব্যাখ্যাকর্তা হিসেবে বিচারালয়ের বিশেষ ভূমিকা থাকে। কিন্তু অলিখিত সংবিধানের ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য নয়।
vi) কার্যকারিতা বিষয়ে পার্থক্য- অলিখিত সংবিধান এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার পক্ষে উপযোগী। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় লিখিত সংবিধানই কাম্য।
সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের গুণাবলী
যে সংবিধান খুব সহজেই সংশোধন করা যায় তাকে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান (Flexible Constitution) বলে। অন্যভাবে বললে, সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে যে সংবিধান সংশোধন করা যায়, তাকে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান বলে। ইংল্যান্ডের সংবিধান হল একটি সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের উদাহরণ। নীচে সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের গুণাবলী তুলে ধরা হল।
i) যুগোপযোগী- সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এর নমনীয়তা। সমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাষ্ট্রের ভূমিকাও ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান যেহেতু সহজেই সংশোধন করা যায় তাই এই জাতীয় সংবিধান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।
ii) জরুরি অবস্থায় বিশেষ সুবিধা- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপযোগী। সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় হলে তা সংশোধন করার জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় এবং সেটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। জরুরি অবস্থায় বা সংকটজনক পরিস্থিতিতে সাধারণত এতটা সময় হাতে পাওয়া যায় না। কিন্তু সুপরিবর্তনীয় সংবিধান যেহেতু সহজেই সংশোধন করা যায় তাই এই সংবিধান জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করতে সক্ষম।
তাছাড়া, সংবিধান সুপরিবর্তনীয় হলে বিপ্লবের আশঙ্কা অনেক কম থাকে। সংবিধানের কোনো ধারা যদি জনমানসে ক্ষোভের সঞ্চার করে, তাহলে খুব সহজেই সেই অংশের সংশোধন করে নতুন যুগের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করা যায়। আবার, বিশেষ পরিস্থিতিতে সংবিধানে যদি কোনো নতুন ধারা সংযোজন করতে হয়, সেক্ষেত্রেও সুপরিবর্তনীয় সংবিধান বিশেষভাবে উপযোগী। এইভাবে সুপরিবর্তনীয় সংবিধানে পরিবর্তিত যুগ-মানসের প্রতিফলন ঘটে।