Types of Constitution
What is Constitution? Types of Constitution? WBCHSE class eleven Political Science notes in Bengali. Chapter- Constitution. Question- How Many Types of Constitutions Are There? Rastrabigyan Prashna Uttar.
একাদশ শ্রেণি
রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর
অধ্যায়- সংবিধান
প্রশ্ন- সংবিধান কাকে বলে? সংবিধানের শ্রেণি বিভাজন করাে। 2+6 (উঃমাঃ 2016)
উত্তর- সাধারণ অর্থে, সংবিধান হল রাষ্ট্র পরিচালনার সেইসব নিয়ম-নীতির সমাহার যা রাষ্ট্রের গঠন, বিভিন্ন সরকারী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বন্টন, রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকদের সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে সুষ্পষ্ট নির্দেশ দেয়। প্রতিটি রাষ্ট্রের নিজস্ব সংবিধান থাকে এবং সেই অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। তবে, সংবিধানের সংজ্ঞা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। কয়েকজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ব্যাপক অর্থে সংবিধানের সংজ্ঞা দিয়েছেন, আবার অনেকেই সংকীর্ণ অর্থে সংবিধানের সংজ্ঞা দিয়েছেন।
ব্যাপক অর্থে সংবিধান হল রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা পরিচালনার জন্য লিখিত ও অলিখিত আইনসমূহ। আর, যারা সংকীর্ণ অর্থে সংবিধানের সংজ্ঞা দিয়েছেন তারা সংবিধানের বিধিবদ্ধ বা লিখিত রূপটিকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং তাদের মতে সাংবিধানিক আইন সাধারণ আইনের থেকে বেশি সম্মানের অধিকারী। সব দিক বিচার বলা যায়, সংবিধান হল রাষ্ট্রপরিচালনার মৌলিক নীতিসমূহের সংকলন যা রাষ্ট্রের গঠন-প্রকৃতি, সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা-বন্টন, রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকের সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয় নির্ধারণ করে দেয়।
সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ
বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সংবিধানের শ্রেণিকরণ করেছেন। এইজন্য সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ নিয়েও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে সংবিধানের শ্রেণিকরণ সম্পর্কে সর্বাধিক প্রচলিত দুটি মাপকাঠি হল- 1) লিপিবদ্ধতা এবং 2) পরিবর্তনশীলতা বা নমনীয়তা।
লিপিবদ্ধতা অনুযায়ী সংবিধানকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়- ক) লিখিত সংবিধান (Written Constitution) এবং খ) অলিখিত সংবিধান (Unwritten Constitution)।
পরিবর্তনশীলতা বা নমনীয়তার ভিত্তিতে সংবিধানকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়- ক) সুপরিবর্তনীয় সংবিধান (Flexible Constitution)এবং খ) দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান (Rigid Constitution)।
লিখিত সংবিধান ও অলিখিত সংবিধান
লিখিত সংবিধান হল সেই সংবিধান যাতে রাষ্ট্র প্রশাসন সম্পর্কিত মৌলিক নীতিগুলি লিখিত আকারে থাকে এবং যা একটি নির্দিষ্ট দলিল হিসাবে একটি নির্দিষ্ট সংস্থার দ্বারা পাস করা হয়। সুতরাং একটি লিখিত সংবিধান তৈরি করা যায় এবং একক দলিল হিসাবে প্রদর্শিত হতে পারে। মার্কিন সংবিধান, ভারতীয় সংবিধান, বাংলাদেশের সংবিধান হল লিখিত সংবিধানের উদাহরণ।
অপরপক্ষে, যে সংবিধান একটি নির্দিষ্ট সংস্থা কর্তৃক নির্দিষ্ট দলিল হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে পাস করা হয়নি এবং রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের বিষয়ে মৌলিক নীতিগুলি রাজনৈতিক রীতিনীতি, বিচারালয়ের সিদ্ধান্ত এবং কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নথিতে রয়েছে, সেই সংবিধানকে বলা হয় অলিখিত সংবিধান। ব্রিটিশ সংবিধান হল অলিখিত সংবিধানের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
অবশ্য অনেকের মতে, সংবিধানের এই শ্রেণিকরণ (লিখিত এবং অলিখিত) বিজ্ঞানসম্মত নয়। কারণ কোনো সংবিধান বাস্তবে পুরোপুরি লিখিত বা অলিখিত হতে পারে না, একটি অলিখিত সংবিধানের অবশ্যই কিছু লিখিত উপাদান থাকতে পারে। তেমনি, একটি লিখিত সংবিধান পুরোপুরি লেখা যায় না, এর কিছু উপাদান অলিখিত আকারে থাকবেই। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ সংবিধান অলিখিত হলেও এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান লিখিত আকারে নথিবদ্ধ রয়েছে। যেমন, ম্যাগনা কার্টা, বিল অফ রাইটস ইত্যাদি। অন্যদিকে, মার্কিন সংবিধান লিখিত হলেও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক বিষয় লিখিত নেই। যথা, রাজনৈতিক দলের সংগঠন, ক্যাবিনেট, কংগ্রেসের কার্য পদ্ধতি ইত্যাদি।
সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
যেকোনো সংবিধান, তা সে লিখিত হোক বা অলিখিত হোক, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করা অনিবার্য হয়ে পড়ে। সংশোধনের মাধ্যমেই সংবিধানকে যুগোপযোগী করে তোলা হয়। যাইহোক, সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি বিভিন্ন রকম হতে পারে।
সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে যে সংবিধান সংশোধন করা যায়, তাকে বলা হয় সুপরিবর্তনীয় সংবিধান। গ্রেট ব্রিটেনের সংবিধান হল একটি সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের উদাহরণ। অপরপক্ষে, সংবিধান সংশোধনের জন্য যদি বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়, তবে সেই সংবিধানকে বলা হয় দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান হলো একটি দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।