Rigid and Flexible Constitution
Differences between Rigid and Flexible Constitution. WBCHSE class eleven Political Science notes in Bengali. Chapter- Constitution. Question- What are the Differences between Rigid and Flexible Constitution? Rastrabigyan Prashna Uttar.
একাদশ শ্রেণি
রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর
অধ্যায়- সংবিধান
প্রশ্ন- দুষ্পরিবর্তনীয় ও সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের পার্থক্য নির্দেশ করাে। 8 (উঃমাঃ 2015, 2019)
Differences between Rigid and Flexible Constitution
উত্তর- সংবিধান-সংশোধন পদ্ধতির ভিত্তিতে সংবিধানকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান (Flexible Constitution) এবং দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান (Rigid Constitution)। নামকরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, যে সংবিধান খুব সহজেই সংশোধন করা যায় তাকে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান বলে এবং যে সংবিধান সংশোধন করতে হলে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় তাকে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলে। সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের উদাহরণ হল গ্রেট ব্রিটেনের সংবিধান এবং দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের উদাহরণ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান। যাইহোক, উভয় প্রকার সংবিধানের মধ্যে কিছু বিশেষ পার্থক্য রয়েছে।
সুপরিবর্তনীয় বনাম দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
প্রথমত, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সহজে সংশোধন করা যায় না। সরকার ইচ্ছা করলেই সংবিধান সংশোধন করতে পারে না। এর ফলে শাসনতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। অপরদিকে, সুপরিবর্তনীয় সংবিধান খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায় এবং সেই কারণে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অক্ষম হয়।
দ্বিতীয়ত, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে সাংবিধানিক আইন ও সাধারণ আইনের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান থাকে এবং সাধারন আইনের থেকে সাংবিধানিক আইন অধিক মর্যাদাসম্পন্ন হয়। অপরপক্ষে, সুপরিবর্তনীয় সংবিধানে সাধারণ আইন এবং সাংবিধানিক আইনের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয় না।
তৃতীয়ত, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বাধানিষেধ আরোপ করা থাকে। সরকার অথবা আইনসভা নিজেদের স্বার্থে এই সংবিধান সংশোধন করতে পারে না। এরফলে সংবিধানের গণতন্ত্রিক ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন থাকে। কিন্তু সুপরিবর্তনীয় সংবিধান খুব সহজেই সংশোধন করা যায় এবং ঘন ঘন সংশোধনের ফলে সংবিধানের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চতুর্থত, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় উভয় প্রকার শাসনব্যবস্থার পক্ষেই উপযোগী। কিন্তু সুপরিবর্তনীয় সংবিধান কেবল এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার পক্ষে উপযোগী, যুক্তরাষ্ট্রের উপযোগী নয়। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দুই ধরনের সরকার থাকে- কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকার। এই দুই ধরণের সরকারের মধ্যে শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতা বন্টন করা থাকে। সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় হলে কেন্দ্রীয় সরকার আঞ্চলিক সরকারের ক্ষমতার উপর হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
পঞ্চমত, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলি সুরক্ষিত থাকে। কিন্তু সুপরিবর্তনীয় সংবিধানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে না বলে অনেকেই মনে করেন। সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় হলে সরকার নাগরিকদের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
ষষ্ঠত, সুপরিবর্তনীয় সংবিধান হল যুগোপযোগী সংবিধান কারণ এই প্রকার সংবিধান খুব সহজেই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করতে পারে। আসলে, সমাজ বা রাষ্ট্র কোনোটাই স্থিতিশীল নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাজব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন আসে। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সেই নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান তা পারে না।
সপ্তমত, সংবিধান সুপরিবর্তনীয় হলে গণবিক্ষোভের আশঙ্কা থাকে না, কিন্তু সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় গণবিক্ষোভের আশঙ্কা থেকে যায়। আসলে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে পুরাতন ধ্যান-ধারণার প্রতিফলন ঘটে। সংশোধন পদ্ধতি জটিল হওয়ার কারণে এই জাতীয় সংবিধানকে নতুন যুগের সঙ্গে মানানসই করে তোলা যায় না। এর ফলে জনমানসে ক্ষোভের সঞ্চার হতে পারে এবং সংবিধান অমান্য করার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
অষ্টমত, সুপরিবর্তনীয় সংবিধান অনায়াসে জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করতে পারে কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান তা পারে না। আসলে, সংকটময় পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য অনেক সময় সংবিধান সংশোধন করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সকল পরিস্থিতিতেই দুষ্পরিবর্তনীয় এবং এইজন্য সংকটের মোকাবিলা করতে অক্ষম।
নবমত, সুপরিবর্তনীয় সংবিধানে আইনসভার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের ব্যাখ্যাকর্তা হিসেবে বিচারবিভাগের নিরঙ্কুশ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।