Merits and Demerits of Unwritten Constitution
Unwritten Constitution and its Merits and Demerits. WBCHSE class eleven Political Science notes in Bengali. Chapter- Constitution. Question- What Are Merits and Demerits of Unwritten Constitution? Rastrabigyan Prashna Uttar.
একাদশ শ্রেণি
রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর
অধ্যায়- সংবিধান
প্রশ্ন- অলিখিত সংবিধান কী? অলিখিত সংবিধানের গুণ ও দোষগুলি আলোচনা করো। 2+6 (উঃমাঃ 2015)
উত্তর- সাধারণ অর্থে, সংবিধান বলতে বোঝায় রাষ্ট্রের শাসনসংক্রান্ত মৌলিক নীতিসমূহকে। সংবিধান লিখিত হতে পারে, আবার অলিখিতও হতে পারে। বিভিন্ন শাসনতান্ত্রিক প্রথা, রীতিনীতি ও বিচারালয়ের সিদ্ধান্তের উপর যে সংবিধান গড়ে ওঠে তাকে অলিখিত সংবিধান বলা হয়। অন্যভাবে বললে, রাষ্ট্র পরিচালনা-সংক্রান্ত মৌলিক নীতিগুলি যদি কোনো দলিলে লিপিবদ্ধ না থাকে, তবে তাকে অলিখিত সংবিধান বলা হয়। ইংল্যান্ডের সংবিধান হল অলিখিত সংবিধানের সর্বোত্তম উদাহরণ।
অলিখিত সংবিধানের দোষ-গুণ
সংবিধান লিখিত হোক বা অলিখিত, উভয় প্রকার সংবিধানেরই কিছু ভালো দিক এবং কিছু খারাপ দিক রয়েছে। নিচে অলিখিত সংবিধানের গুণ এবং দোষগুলি তুলে ধরা হল।
অলিখিত সংবিধানের গুণাবলী
1) নমনীয়তা- অলিখিত সংবিধানের প্রধান সুবিধা হল এর নমনীয়তা বা সহজ-পরিবর্তনশীলতা। সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতেই অলিখিত সংবিধানের কোনো অংশ পরিবর্তন করা যায়। এর ফলে সহজেই সরকারের জনকল্যাণকর কর্মসূচিতে সাংবিধানিক প্রতিবন্ধকতা দূর করা যায়।
2) যুগোপযোগীতা- অলিখিত সংবিধান যেহেতু খুব সহজেই সংশোধন করা যায় তাই এই প্রকার সংবিধান নতুন যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। বর্তমানে সমাজ এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা খুব খুব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। এইরূপ পরিবর্তনশীল সমাজ ব্যবস্থায় অলিখিত সংবিধান অনেক বেশি মানানসই।
3) জরুরি অবস্থায় কার্যকারিতা- জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে অলিখিত সংবিধান অনেক বেশি উপযোগী। লিখিত সংবিধান সাধারণত দুষ্পরিবর্তনীয় হয় বলে প্রায়শই জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করতে পারেনা এবং সেইজন্য শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা দেখা দেয়। যেহেতু অলিখিত সংবিধান সুপরিবর্তনীয় হয়, তাই সহজেই সংবিধান সংশোধন করে জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করা যায়।
অলিখিত সংবিধানের ত্রুটিসমূহ
1) অস্পষ্টতা- অলিখিত সংবিধানের বিরুদ্ধে প্রধান সমালোচনাটি হল এই প্রকার সংবিধানের অস্পষ্টতার দোষে দুষ্ট। অলিখিত সংবিধানের বেশিরভাগটাই যেহেতু অলিখিত অবস্থায় থাকে সেইজন্য শাসনতান্ত্রিক নীতি নিয়ে মাঝে মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
2) অপপ্রয়োগের আশঙ্কা- অলিখিত সংবিধান খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায় বলে অপপ্রয়োগের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রবল জনমতের চাপে সরকার সংবিধান সংশোধন করার কথা ভাবতে পারে এবং পরে তা ভুল প্রমাণিত হলে পুনরায় সংবিধান সংশোধন করতে হতে পারে। এইভাবে বারবার সংবিধান সংশোধন করলে যেমন সংবিধানের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় তেমনি সংবিধানের মূল উদ্দেশ্য গুলি ব্যহত হয়। তাছাড়া, সহজেই সংবিধান সংশোধন করে সরকার যে কোনো সময় স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে।
3) যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনুপযোগীতা- অলিখিত সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের পক্ষে অনুপোযোগী। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারগুলির মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন, নাহলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় একটি লিখিত সংবিধানই কাম্য।
অলিখিত সংবিধান সম্পর্কে উপরোক্ত সমালোচনা সত্ত্বেও বলা যায়, অলিখিত সংবিধান নমনীয় এবং সেইজন্য যুগোপযোগী সংবিধান। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার পক্ষে এই প্রকার সংবিধান কার্যকর নয় একথা সত্য, তবে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় অলিখিত সংবিধান বিশেষ ফলপ্রসু। তাছাড়া সংবিধান লিখিত হোক বা অলিখিত, সরকারের সদিচ্ছার উপর সবকিছু নির্ভর করে।