Nature of Presidential Government
Nature of Government ruled by President. WBCHSE class 11 political science question and answer in Bengali for test exam and Annual Examination. Chapter- Forms of Government. Question- Nature of Presidential Government.
রাষ্ট্রবিজ্ঞান (একাদশ শ্রেণি)
অধ্যায়- সরকারের বিভিন্ন রূপ
প্রশ্ন- রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করাে। (8)
উত্তর- ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ অনুসারে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়- 1) সংসদীয় বা মন্ত্রীপরিষদ চালিত এবং 2) রাষ্ট্রপতিশাসিত। সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতি প্রযুক্ত না থাকায় আইনবিভাগ ও শাসনবিভাগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। অপরপক্ষে, রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় শাসনবিভাগ ও আইনবিভাগ স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে। সহজ ভাষায় বললে, আইনবিভাগ ও শাসনবিভাগের পূর্ণ স্বাতন্ত্র্যের ভিত্তিতে যে সরকার সংগঠিত হয়, তাকে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার বলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা হল রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের প্রকৃতি
1) শাসনবিভাগের স্বাতন্ত্র্য- রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের প্রথম এবং প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এই যে, এইরূপ শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ ঘটে। এর ফলে, আইনবিভাগ এবং শাসনবিভাগ দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে কাজ করে। রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারে রাষ্ট্রপতি যেমন আইন প্রণয়নের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না, তেমনই আইনবিভাগও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনোরূপ ভূমিকা নেয় না।
2) রাষ্ট্রপতি সর্বময় কর্তা- রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের রাষ্ট্রপতিই হলেন প্রকৃত শাসনকর্তা। সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় যেমন একজন নিয়মতান্ত্রিক শাসক থাকেন এবং প্রকৃত শাসনক্ষমতা ভোগ করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদ, কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারে কোনো নিয়মতান্ত্রিক শাসক থাকে না। এইরূপ শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি নিজে স্বনামে শাসনকার্য পরিচালনা করেন।
3) গুরুত্বহীন মন্ত্রিপরিষদ- রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতিকে সহায়তা করার জন্য একটি মন্ত্রিপরিষদ থাকে। রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীপরিষদ বা ক্যাবিনেট-সদস্যদের নিয়োগ করেন এবং তার বিরাগভাজন হলে যেকোনো সদস্যকে তিনি বহিষ্কার করতে পারেন। সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীদের যেরূপ মর্যাদা থাকে, রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারে মন্ত্রীদের সেই মর্যাদা নেই। এইরূপ শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীগণ রাষ্ট্রপতির অধস্তন কর্মচারীমাত্র।
4) জনগণের নিকট দায়বদ্ধতা- রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারে রাষ্ট্রপতি জনগণ কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হন। তাই তাকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হয়। রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন করার বা অপসারণ করার ক্ষমতা আইনবিভাগের হাতে থাকে না।
5) অধিক শক্তিশালী- অনেকের মতে, রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার সংসদীয় সরকারের থেকে অধিক শক্তিশালী হয়। ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতি প্রয়োগ করার ফলে আইনবিভাগ রাষ্ট্রপতির কাজে অযথা হস্তক্ষেপ করতে পারে না। আবার, রাষ্ট্রপতিকে আইন প্রণয়নের কাজে মাথা ঘামাতেও হয় না। এইজন্য রাষ্ট্রপতি অবাধে সাংবিধানিক উপায়ে শাসনকার্য পরিচালনা করতে পারেন। তাছাড়া, তথ্যগতভাবেও সংসদীয় শাসনব্যবস্থার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী যতখানি শক্তিশালী হন, রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি তার থেকে অধিক শক্তিশালী হন। তবে, সরকার কতখানি শক্তিশালী হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে রাস্ট্রপতির ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং বিচক্ষণতার উপর।
6) অধিক স্থায়িত্বশীল- রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি হলেন সর্বময় কর্তা। তিনি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। নির্দিষ্ট কার্যকালের মধ্যে তাকে প্রমাণিত অক্ষমতা, সংবিধানভঙ্গ, দুর্নীতি বা দেশদ্রোহিতার অপরাধ ব্যতীত অন্য কোনো কারণে পদচ্যুত করা যায় না। ফলে, পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত তার স্বপদে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তুলনামূলকভাবে বলা চলে, সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় সরকারের মেয়াদ নির্ভর করে আইনবিভাগের উপর এবং আইনবিভাগের আস্থা হারালে সরকারের পতন অনিবার্য হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির নির্বাচন এবং অপসারণ আইনবিভাগের উপর নির্ভর করে না। সেইজন্য রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের স্থায়িত্বশীলতা অনেক বেশি হয়।
পরিশেষে বলা যায়, রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার প্রকৃত অর্থেই রাষ্ট্রপতি দ্বারা শাসিত শাসনব্যবস্থা। তিনি একইসঙ্গে সরকারের প্রধান এবং রাষ্ট্রের নেতা।
এই অধ্যায় থেকে অন্যান্য প্রশ্ন
এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের পার্থক্য।
সংসদীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য।
ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র বলা যায় কিনা।